রুদ্রাক্ষ টা হাতের মুঠোয় রেখে নিজের বন্ধুর কথা ভেবে খুব কাঁদছে।
--"শিব...... স.. দা.... স... হা... য়তে।" ভারি নিঃশ্বাসে প্রথম বার এত কষ্ট তে আদেশ ডাকল যাতে। হঠাৎ আদেশের মনে পড়ল রুদ্রাক্ষ তো ওর মা ঠাকুর স্থানে রেখেছিল। মাথা তুলে দেখতেই ওর মুখ হাঁ হয়ে গেল। একটা ছায়া রুপে আকৃতি, কর্পূরের মত গন্ধ আর বাঘের চামড়ার আবরণ। তার দুটো হাত আদেশ কে ধরে তুলল। সামনে আসার পর আদেশ দেখল তার সামনে সেই দাঁড়িয়ে যে ওকে বাঁচিয়ে ছিল। শিবায়!
--"বলেছিলাম না আরেকটা ঝড় আসবে।" আদেশ এইটা শুনতেই ওকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদছে। অনেক বছরের চাপা কষ্ট যেই ভাবে বেড়ায়, আদেশ ঠিক সেই ভাবে শিবায় কে ধরে রেখেছে। চিতকার করছে আঁকড়ে ধরে আর শিবায় ওর মাথায় হালকা করে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
--"শান্ত হও। এবার শান্ত হও। আমি এসছি তো।" শিবায় ধরে এক জায়গায় বসাল।
--"কেন? এরকম কেন আমার সাথে?"
--"তুই যার কথা বলছিস, সে তোকে কখনই চায়নি।" শিবায় বলল আর আদেশ হঠাৎ স্তব্ধ হয়ে গেল।
--"হ্যাঁ। দিপ্তি তোর ভালো চেয়েছে কিন্তু তোকে চায়নি। আর আমি এইটা তোকে কষ্ট দেয়ার জন্য নয়, ওর থেকে গুরুতর জিনিসের জন্য এসেছি।"
--"মানে?"
--"যেই কষ্টটা নিয়ে চলছিস সেটাকে বহন কর। ভার ওঠা এই বিষের আর এগিয়ে চল। মনে রাখিস নিজেকে একা ভাববিনা। কষ্ট তোকে আমার কাছে নিয়ে এসেছে, হয়তো তোকে পাল্টেও দিতে পারে কিন্তু মনে রাখিস তুই নিজের মনে কখনো খারাপ কিছু আনবি না।"
--"যদি সবকিছু জানতে তাহলে পাঠালে কেন ওকে আমার কাছে?"
--"সব কারণ বলা যায়না বন্ধু। আজ যদি দীপ্তি না থাকতো তাহলে আমি তোর সামনে এসে দাঁড়াতাম না। কে কোন কারণে আসে, সেটা বলা যায়না। প্রত্যেক ঘটনা একটা অন্য ঘটনার সুত্রপাত হয়। মনে রাখিস।"
--"প্রত্যেক কষ্টের আর প্রত্যেক মনস্তাপের একটা সময় থাকে। তোর বন্ধু তে আমি শিবায়। তোর জীবন যুদ্ধে আমি কৃষ্ণ।" আদেশ সব শুনছে চুপচাপ। মন শান্ত হয়েছে কিন্তু কষ্টের এক ভাগ রয়ে গেছে।
--"আমি কি করবো এখন?"
--"নিজের কষ্ট কে নিজের অস্ত্র বানা। নিজের অন্ধকারের সাথে লড় ততক্ষন যতক্ষণ জিৎ তোর না হয়। সামনে অনেক কিছু ঘটতে চলেছে যা তোর কাছে অজানা। নিজের দায়িত্ব পুরো করতে থাকে আর বলতে থাক"
--"শিব সদা সহায়তে।"
©Ananta Dasgupta
Continue with Social Accounts
Facebook Googleor already have account Login Here